১. এ হিসাবটি অর্থ-জমাকারী গ্রাহক ও আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিঃ এর মধ্যে সম্পাদিত ইসলামী শরীয়াহ্ ভিত্তিক একটি মুদারাবা চুক্তি।
২. মুদারাবা ওয়াক্ফ জমা চিরস্থায়ী দান হিসাবে গ্রহন করা হয়। এই হিসাব খোলার পর আর বন্ধ করা যায় না।
৩. এখানে অর্থ জমাকারী গ্রাহক হচ্ছে সাহিব- আল-মাল এবং ব্যাংক হচ্ছে মুদারিব।
৪. ইসলামী শরীয়াহ্ বর্ণিত নীতিমালার ভিত্তিতে ব্যাংক এ অর্থ জমা গ্রহণ করে জমাকৃত অর্থ শুধু ইসলামী শরীয়াহ্ সম্মতভাবে বিনিয়োগ করতে পারবে।
৫. ব্যাংক মুদারাবা তহবিল বিনিয়োগ করে প্রাপ্ত আয়ের কমপক্ষে ৭০% নির্ধারিত ওয়েটেজ অনুসারে‘‘সাহিব আল-মাল”এর মধ্যে বন্টন করবে। বিনিয়োগ লোকসান হলে সাহিব -আল-মাল তা বহন করবে। এছাড়া ইসলামী শরীয়াহ্ বর্ণিত মুদারাবা চুক্তির অন্যান্য শর্তাবলী প্রযোজ্য হবে।
৬. এই উদ্দেশ্যে ব্যাংক কর্তৃক তালিকাভূক্ত নির্ধারিত খাত সমূহ নিন্মরূপ এবং ওয়াকিফ নিন্মোক্ত তালিকাভুক্ত খাত সমূহের মধ্য থেকে অথবা ইসলামী শরীয়াহ্ অনুমোদিত যে কোন খাত নির্বাচন করার এখতিয়ার রাখেন।
হিসাব পরিচালনার নিয়মাবলী :
৭. সুস্থ মস্তিস্ক প্রাপ্তবয়স্ক যে কোন বাংলাদেশী নাগরিক আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিঃ এর যে কোন শাখায় আবেদন ফরম পূরণ করে এই হিসাব খুলতে পারবেন।
৮. ওয়াকীফ তার স্থীরকৃত সমুদয় অর্থ এককালীন ক্যাশ জমা দিয়ে ওয়াক্ফ হিসাব খুলতে পারেন অথবা তিনি ন্যূনতম টাকা ১০,০০০/- (দশ হাজার) মাত্র জমা দিয়ে ওয়াক্ফ হিসাব শুর“ করতে পারেন। পরবর্তী পর্যায়ে এক হাজার টাকা বা তার গুনিতক জমা দিতে পারবেন। প্রয়োজনে সংশিষ্ট আইন-কানুন ও শর্তাবলী পরিপালন সাপেক্ষে বৈদেশিক মুদ্রায় ও এ হিসাব খোলা যায়।
৯. ক্যাশ ওয়াক্ফ জমা ছাপানো রশিদের মাধ্যমে গৃহীত হবে এবং ঘোষিত টাকার পরিমান যখন সম্পূর্ণ জমা হবে, তখন ওয়াক্ফ হিসাবে মূল জমা টাকার রশিদ প্রদান করা হবে।
১০. ওয়াক্ফ হিসাবে অর্জিত মুনাফা ওয়াকীফের ইচ্ছা অনুযায়ী বন্টন ও স্থানান্তরিত করার জন্য এক বা একাধিক এসএনডি/ সঞ্চয়ী/ চলতি হিসাব সংশিষ্ট শাখায় পরিচালনা করা যাবে।
১১. আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিঃ এ ওয়াকীফ কর্তৃক পরিচালিত চলতি/সঞ্চয়ী/এসএনডি হিসাব থেকে (অনুমোদন সাপেক্ষে) ওয়াকীফ কর্তৃক নির্ধারিত কিস্তি ওয়াক্ফ হিসাবে জমা করার জন্য স্থায়ী নির্দেশ দিতে পারেন। এই হিসাব থেকে আবগারী কর/অন্যান্য কর/সার্ভিসচার্জ সরকারী নির্দেশ/ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী কর্তণ করা হবে।
১২. ওয়াকীফের মৃত্যু হলে ওয়াক্ফ হিসাবের মুনাফা তার নির্দেশিত খাতে/উদ্দেশ্যে ব্যয় করা হবে। এক্ষেত্রে, ঘোষিত পরিমাণের চেয় কম অর্থ জমা হয়ে থাকলে মৃতের উত্তরাধিকারী (গণ) বাকী অংশ জমা দিতে পারবেন।
১৩. যেহেতু মুদারাবা ওয়াক্ফ তহবিল মুদারাবা নীতির ভিত্তিতে পরিচালিত হয়, সেহেতু ওয়াক্ফ হিসাবে প্রদত্ত টাকার পরিমাণ অক্ষুন্ন নাও থাকতে পারে। মুদারাবা নীতি অনুযায়ী ব্যবসায় যদি কোন লোকসান হয় তা ওয়াক্ফ জমা থেকে বিকলন করে সমন্বয় করা হবে। উলেখ করা যেতে পারে যে, কেবল মাত্র লভ্যাংশ ওয়াকীফ কর্তৃক নির্দেশিত খাতে/উদ্দেশ্যেই ব্যয়িত হবে। অবন্টিত মুনাফা মূলওয়াক্ফ হিসাবের সাথে স্বয়ংক্রিয় ভাবে যোগ হবে এবংতার উপর যথানিয়মে মুনাফা অর্জিত হবে।
১৪. ওয়াক্ফ ব্যবস্থাপনা কমিটি ওয়াক্ফ তহবিল ব্যবস্থাপনা করবেন । ওয়াক্ফ তহবিলের অব্যবস্থাপনা বা অন্য কোন কারণে যদি কোন সংশয় সৃষ্টি বা অভিযোগ উত্থাপিত হয়,তাহলে ওয়াক্ফ ব্যবস্থাপনা কমিটি বিষয়টি পর্যলোচনা করবেন এবং এই কমিটির সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
১৫. এই প্রকল্পের আওতায় সংশ্লিষ্ট ওয়াক্ফ হিসাবের বর্ষপূর্তিতে ব্যাংক মুনাফা প্রদান করে। তবে কোন ওয়াকীফ যদি মাসিক মুনাফা নিতে আগ্রহী হন, তা বিবেচনাপূর্বক মাসিক মুনাফা প্রদান ভিত্তিক ওয়াক্ফ হিসাব খোলা যাবে। সে ক্ষেত্রে কোন অবস্থাতেই মুনাফার অংশ অবন্টিত রাখা যাবেনা। অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট মাসের লাভ অবশ্যই উক্ত মাসে বন্টন করে দিতে হবে। ওয়াক্ফী সমস্ত/আংশিক মুনাফা তার নির্ধারিত উদ্দেশ্যে/খাতে ব্যয় করার জন্য ব্যাংককে নির্দেশ দিতে পারেন।
১৬. এই হিসাবের ক্ষেত্রে কোন চেক বই প্রদান করা হয় না। ক্যাশ ওয়াক্ফ হিসাব একটি আলাদা লেজারেও সংরক্ষণ করা হবে।
১৭.কিস্তি ভিত্তিক হিসাব এর ক্ষেত্রে যদি ওয়াকীফ কিস্তি জমা দিতে ব্যার্থ হন তাহলে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে যে কিস্তি গুলো জমা দেয়া হয়েছে তার উপর মুনাফা প্রদান করা হবে।
১৮. ওয়াকীফ অথবা তার মৃত্যুতে উত্তরাধিকারী/নমিনী যদি তার হিসাবে তার কিস্তি দিতে ব্যর্থ হন, তবে তিনি/তার এই মর্মে লিখিত ভাবে অনুরোধ জানাবেন যে, তিনি ওয়াক্ফ হিসাবের ঘোষিত পরিমাণের কিস্তিগুলো জমা দিতে অপারগ। অতঃপর শাখা ব্যবস্থাপকের অনুমোদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে যে পরিমাণ টাকা ওয়াক্ফ হিসাবে এ পর্যন্ত জমা হয়েছে সেই পরিমাণ অর্থের জন্য ক্যাশ ওয়াক্ফ রশিদ প্রদান করা হবে।
১৯. যে খাতে/উদ্দেশ্যে ওয়াক্ফ হিসাবের মুনাফা ব্যয় হবে তা যদি শেষ হয়ে যায়/অস্তিত্বহীন/ নিঃশেষ হয়ে যায় তাহলে উক্ত মুনাফা ব্যয়ের অন্য খাত/উদ্দেশ্য হিসাব খোলার সময় বিশেষ নির্দেশনায় অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। যদি উহা উল্লেখ করা না হয় অথবা কোন কোন জটিলতা দেখা দেয় তবে এক্ষেত্রে ওয়াক্ফ ব্যবস্থাপনা কমিটি অনুরুপ কোন উদ্দেশ্যে মুনাফা ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নিবে এক্ষেত্রে কমিটির সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
২০. মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০০৯ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিভাগ কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে জারীক্রিত সার্কুলার/ নীতিমালা অনুযায়ী গ্রাহক ব্যাংকের চাহিদা মোতাবেক যে কোন তথ্য সরবরাহ করতে বাধ্য থাকবেন।
২১. ব্যাংক প্রয়োজনে সময় সময়ে এই প্রকল্পের নিয়ম কানুন পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন, বিয়োজন, সংশোধন করার অধিকার সংরক্ষণ করে।
২২.ক্যাশওয়াক্ফের জন্য চারটি খাতের অধীনে ২৬টি উপখাতের নাম উলেখ করা হয়েছে। তবে এ উপখাত শরীয়াহ সম্মত হতে পারে। ওয়াকিফ ক্যাশ ওয়াক্ফ এর মুনাফা নিম্নোক্ত খাত অনুযায়ী বন্টনকরার জন্য ব্যাংককে নির্দেশ প্রদান করতে পারেন।
দরিদ্র পরিবার পুনর্বাসন:
১. প্রকৃত দরিদ্রের অবস্থার উন্নয়ন
২. প্রতিবন্ধি ও সুবিধা বঞ্চিত লোকদের পূর্ণবাসন
৩. ভিক্ষুক পূর্ণবাসন
৪. অসহায় মহিলাদের পূর্ণবাসন
৫. নগর বস্তিবাসীদের উন্নয়ন
শিক্ষা ও সংস্কৃতি:
৬. এতিমদের শিক্ষা অর্থাৎ বইপত্র এবং কাপড় চোপড় বিনা মূল্যে সরবরাহ করা
৭. দক্ষতা উন্নয়নকল্পে যথার্থ শিক্ষার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ
৮. বৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে অসহায় যোগ্য ছাত্রদের শিক্ষায় সহায়তা